Showing posts with label Bangla. Show all posts
Showing posts with label Bangla. Show all posts
সৈয়দ বুলবুল জামানুর হক
লেখার হেডলাইনের উপর ভিত্তি করে অনেকে ভাবা মতো জনপ্রিয় কৃষক নেতা এবং কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির সভাপতি অখিল গগৈকে হকে-বিহকে সমালোচনা করা এই লেখার উদ্দেশ্য বা বিষয় বস্তু নয়। কিন্তু কোনো ব্যক্তি এবং সংগঠনই সীমবদ্ধতা ও সমালোচনার উদ্ধে নয়। ঠিক সেভাবে অখিল গগৈ এবং কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতিও সীমাবদ্ধতা ও সমালোচনার উদ্ধে নয়। অখিল গগৈর ঘোর শত্রুও আজ অসমের সাম্প্রতিক পটভূমিতে তার নেতৃত্বাধীন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির আন্দোলনের প্রাসংগিকতা এবং গুৰুত্ব স্বীকার করতে বাধ্য। আমার পৰিচয় তার একজন শুভাকাংক্ষী। লেখার মূল বিষয়বস্তু উত্থাপনের পূর্বে অসমের সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে অখিল গগৈ নেতৃত্বাধীন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির আন্দোলনের প্রতি আমার অনুভব ছোট করে হলেও ব্যক্ত করার প্রয়োজন আছে। আমি আশাবাদী, আমার অনুভব পাঠক সমাজ, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতৃত্ব, কর্মী, সমর্থক ও শুভাকাংক্ষীরা এই লেখার সারমর্ম উপলব্ধি করতে সহায়ক হবে।কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির আন্দোলন পর্যবেক্ষন, অধ্যয়ন এবং গবেষণা করলে দেখা যায়- অখিল গগৈর সবল নেতৃত্বে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি অসমে দুনীতি বিরোধী আন্দোলনকে এক নতুন মাত্রা প্রদান করেছে। বৃহৎ নদীবান্ধ বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে আপোচহীন প্রতিরোধ আন্দোলনের এক ঐতিহাসিক নজির সৃষ্টি করেছে। থলুওয়া এবং জনজাতীয় লোকের জমির অধিকার আন্দোলনের ক্ষেত্রে আপোচহীনভাবে ধারাবাহিক আন্দোলন করে এক আদর্শ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বর কথা হল- অসমে জাতীয়তাবাদী ধারার আন্দোলনটা শ্রেণী চরিত্রর আদর্শ দিয়ে মহীয়ান করে অসমের থলুওয়া শ্রমিক, কৃষক, মধ্যবিত্ত ও সাধারণ জনগণের প্রকৃত সমস্যাগুলো অসমের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ রূপ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করার যত্ন করেছে। বরং আমি বলতে চায় অখিল গগৈ নেতৃত্বাধীন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি জাতি-ধর্ম-বর্ণ-ভাষা নির্বিশেষে অসমের সব স্তরের লোককে আস্থাই নেওয়ার যত্ন করে ধীরে ধীরে এক প্রচুর সম্ভাৱনাময় শক্তিশালী বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্ম প্রকাশ করেছে। এই বিকল্প রাজনীতি বর্তমান ভাঙোনমুখী বৃহত্তর অসমীয়া জাতির ফের গঠন প্রক্রিয়ার পথ শুধু সুচল করে তোলার জন্য সজীব করে তোলেছে। গণ আন্দোলনকারী হিসেবে অখিল গগৈ আজ অসমের এক আপোচহীন জাতীয় (?) প্রতিবাদী কণ্ঠ হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু অসমের সংখ্যালঘু মুছলমানের সংকটের সময় এই আপোচহীন জাতীয় প্রতিবাদী কণ্ঠ কোথায় হারিয়ে যায়? কেন হয়ে পরেন নিশচুপ ? কেন অনেক ক্ষেত্রে একজন আপোচকামী দুর্বল, নীরৱ এবং সুবিধাবাদী ভূমিকা গ্রহণ করতে দেখা যায়? তথাকথিত জাতীয়তাবাদী শিবিরের সমর্থন হারানোর ভয় না প্রচার মাধ্যম থেকে হারিয়ে যাওয়ার ভয় ? না সত্যি করে নীতিগত ভাবেই সংখ্যালঘু মুছলমানদের প্রতি দায়বদ্ধতার অভাব। আমার এই ক্ষোভ ভরা অভিযোগ কিন্তু আৱেগসৃষ্ট নয়। তথ্য এবং যুক্তিৰ উপর ভিত্তি করে বলতে বাধ্য হয়েছি। বিগত সময়ে অসমের সংখ্যালঘু মুছলামনের বিভিন্ন সংকটের সময় অখিল গগৈ ও তার সংগঠন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি গ্রহণ করা ভূমিকার কথা পর্যবেক্ষন, অধ্যয়ন ও গবেষণা করলে আমার এই অভিযোগের যথার্থতা স্পষ্ট করে বেড়িয়ে আসবে।
কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি পূর্বে ঘোষিত অনুযায়ী ২০ অক্টোবর থেকে সংগঠনটির প্রতিনিধি দল একটি নামনি অসমের বিভিন্ন জেলাই তিন মাসের পদযাত্রা কাৰ্যসূচী আরম্ভ করেছে। নিঃসন্দেহে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতিৰ এই পদযাত্রা ঐতিহাসিকভাবে আদরণীয় হয়ে থাকবে। আশা করি এই ঐতিহাসিক পদযাত্রাই নামনি অসমের ইতিহাস, ভূগোল, আর্থসামাজিক, শৈক্ষিক ও রাজনৈতিক সমস্যা সম্পর্কে বেশ ভাল জ্ঞান লাভ করতে সহায়ক হবে। আমরা সবাইজানি যে-নামনি অসমের প্রায় প্রত্যেকটি জেলা সংখ্যালঘু মুছলমান অধুষিত এবং এর এক বৃহৎ অংশ চর-চাপরি। এই প্রেক্ষাপটে আমার মনে জাগ্রত হওয়া প্রাসংগিক চিন্তাটা হল- কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির আন্দোলন ও অসমের সংখ্যালঘু মুছলমানদের অংশগ্রহণের প্রশ্ন। আমার মনে জাগ্রত হওয়া এই প্রশ্নগুলো তথ্যসহকারে যুক্তি দিয়ে বলতে চায় ঃক) ২০১২ সন বিটিএডি জ্বলেছিল। হিংসার লেলিহান শিখা ও ভাতৃঘাতী সংঘৰ্ষই মানৱতাকে ভূ-লষ্ঠিত করে ১১৪ জনেরো বেশি লোকের প্রাণ নিয়েছিল। গৃহহীন ও জমিহীন হয়েছিল প্রায় পাঁচ লক্ষ লোক। এই নরমেধ যজ্ঞকে নিয়ে গোটা ৰাজ্যে চলেছিল সুলভ এবং গরম রাজনীতি। একাংশ সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল, তথাকথিত অরাজনৈতিক জাতীয়-জনগোষ্ঠীয় সংগঠন, একাংশ সংবাদ মাধ্যম ও একাংশ তথাকথিত বৌদ্ধিক মহল এই গোষ্ঠী সংঘর্ষকে থলুওয়া এবং বিদেসী বাংলাদেশীর সংঘাত বলে প্রতিষ্ঠা করার জন্য উঠে-পরে লেগেছিল। তারা বিদেসী সমস্যার আলম নিয়ে ফের অসম আন্দোলনের মতো একটি অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। অসমের বিভিন্ন সহর-নগরে কর্ম করে জীৱিকা নির্বাহ করা শ্রমজীবি সংখ্যালঘু মুছলামনের ওপরেও অমানৱীয় আক্রমন করার সাথে সাথে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনো চালিয়েছিল। সে সময় আমাদের আপোচহীন জাতীয় প্রতিবাদী কণ্ঠ কৃষক নেতা অখিল গগৈ ও তার সংগঠন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি কি ভূমিকা গ্রহণ করেছিল? যতটুকু আমার মনে আছে অখিল গগৈ সেই সময় বিটিএডির সংঘর্ষজর্জর অঞ্চলের বুজ নিয়ে এসে অবৈধ অনুপ্রৱেশই বিটিএডিৰ গোষ্ঠী সংঘর্ষর এক অন্যতম কারণ বলে নিজেই সেই সুলভ ও গরম রাজনীতির অংশীদার হৈ পরেছিল। সবসময় সত্য ও ন্যায়ৰ কথা বলা অখিল গগৈ সেই সময় সত্য ও ন্যায়র পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারলেন না কেন ? অখিল গগৈ কি তথ্য ও যুক্তিৰ ওপর ভিত্তি করে অবৈধ অনুপ্রৱেশই বিটিএডির গোষ্ঠী সংঘর্ষের এক অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করেছিল? সেই তথ্য ও যুক্তির যথার্থতা প্রমাণ করতে অখিল গগৈকে প্রত্যহ্বান জানায়। সে আমার এই প্রত্যাহবান গ্রহণ করবেন কি? গণতন্ত্র, মানবতা ও খেটে খাওয়া লোকের অধিকার রক্ষার শ্লোগান দেওয়া অখিল গগৈ সেই সময় কেন বিটিএডির দুর্গতদের পাশে ছিলেন না? তাদের জীবন ও সম্পত্তির উপযুক্ত নিরাপত্তা, পুনর সংস্থাপন ও অন্যান্য আরও মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য এক আপোচহীন বৃহৎ ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গঢ়ে তোলার বিপরীতে জাতীয় প্রগতিশীল চরিত্রর অখিল গগৈ তথাকথিত জাতীয়তাবাদী শিবিরের সুরে সুর মিলিয়ে বিদেসী বহিষ্করণের জন্য দ্বিতীয় পর্যাযের অসম আন্দোলনের নেতৃত্ব নিতে বের হয়ে আসছিলেন। দুর্গত লোকদের জন্য বোধহয় এর চেয়ে বর দুর্ভাগ্যজনক কথা আর কিচ্ছ হতে পারেনা। অবশ্যে সে সময় কৃষক মুক্তিয়ে নেওয়া বিদেসী বহিষ্করণের কার্যসূচী যে তথাকথিত জাতীয়তাবাদী শিবির থেকে ইছু হাইজেক্ করেছিল সেটা আমরা অস্বীকাৰ করি না। আমারাও চায় বিদেসী বিতাড়ণ, বিদেসী মুক্ত অসম। কিন্তু তার পরও বার বার বলবো অসমের সংখ্যালঘু মুছলমান নিধনযজ্ঞর বেদীতে এই বিদেসী বহিষ্করণ আন্দোলনের আয়োজন কেন?
খ) জমির পাট্টা আন্দোলনের প্রসংগ ঃ অখিল গগৈর নেতৃত্বে গুয়াহাটীৰ থলুওয়া লোকের জমি পাট্টার স্বার্থে যে আন্দোলন আপোচহীনভাবে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছে সেটা চাওয়ার মতো। কিন্তু গুয়াহাটীবাসীর প্রতি থাকা দরদের মতো কেন দরদ নেই বিটিএডিবাসীর প্রতিও ? বর্তমানের বিটিএডি এলেকাই বিগত ৫১ বছসরই জমির জরীপ নাকৰায় সত্তৰ শতাংশ লোকের নিজের নামের জমির পাট্টা নাই বলে অভিযোগ। বিটিএডি এলেকাই বসবাস করা মুছলমানদের সঙ্গে কোচ-রাজবংশী, আদিবাসী, নেপালী ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীয় লোকেরো জমির পাট্ট নাথাকায় এক প্রকার নিজেকে তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক বলে অনুভব করার মতো ভয় ও শংকাময় পৰিস্থিতিতে দিন কাটানোর পরও কেন আজও গঢ়ে উঠলনা বিটিএডি এলেকার জন্য জমি পট্টন আন্দোলন? শুধু তাই নয়, ২০১২ সনের বিটিএডির গোষ্ঠী সংঘর্ষের পরবর্তী সময় যখন অসম সরকার ও বিটিসি প্রশাসনের এক নির্দেশনাই সেই গোষ্ঠী সংঘর্ষে গৃহহীন ও জমিহীন হওয়া লক্ষ লক্ষ সর্বহাৰা মুছলমানদের জমি পাট্টা নাথাকার অজুহাতে প্রত্যেকটি পরিবারকে মাত্র পঞ্চাস হাজার টাকাৰ সৰকাৰী সাহায্য প্রদানের নামে বাধ্যতামূলকভাবে এক শপতনামা (এফিট্এভিট্) দাখিলের ব্যৱস্থা করি তাদেরকে ফের নিজর ঘৰ, জমির সংস্থাপিত হওয়া থেকে বঞ্চিত করার ভয়ংকর ষড়যন্ত্র রচনা করেছিল। সর্বহারার নেতা অখিল গগৈ সে সময় জমিহীন দুর্গত লোকের জমির অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলনের কার্যসূচী গ্রহণ করেননি কেন?
গ) এখন বলছি ২০১৪ সনের বিটিএডির নারায়ণগুরি,বালাপারা ও অসম-নাগালেণ্ড সীমান্তের উড়িয়ামঘাটের প্রসঙ্গ। বর্ষটির মে’ মাসে বিটিএডির নারায়নগুরি ও বালাপারাই ফের শুরু হয়েছিল নরমেধযজ্ঞ। শিশু, মহিলাসহ প্রাণ হারালেন অৰ্দ্ধশতাধিক সংখ্যালঘু মুছলমান। অখিল গগৈ এক দিনের জন্য ওই ঘটনাই উপস্থিত হয়েছিলেন উক্ত সংঘর্ষে সর্বস্ব হারানো এইসব লোকের আত্মীয়দের পাশে। রেচনের দাবীতে একদিনের আন্দোলন কাৰ্যসূচী নিয়েই সব দায়িত্ব শেষ বলে ভেবে দুদিনেই বিটিএডি ভুলে গিয়ে খুওব দৃষ্টিকটুভাবে কাজিৰঙাতে গড় হত্যার প্রতিবাদে বলিষ্ঠ আন্দোলন নেন। কাজিরঙার এশিঙীয়া গড় আমাদের অসমের জাতীয় গৌরব। এটা আমরা রক্ষণাবেক্ষন দিতেই লাগবে। এতে কারও দ্বি-মত নেই। কিন্তু নিশ্চিতভাবে সে সময় গড় হত্যার প্রতিবাদের চেয়ে বিটিএডির দুর্গতদের পাশে অখিল গগৈর মতো একজন সংগ্রামী নেতার খুওব আৱশ্যক ছিল। এই প্রসঙ্গে একটি কথা উল্লেখ না করলেই হবেনা যে- এবারের বিটিএডির নরমেধযজ্ঞর মধ্যে কেউ কিন্তু বিদেসী বাংলাদেশীৰ ভূত দেখেননি। তাই সবাই একেমূখে ওই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ করল। এই সুযোগে সংখ্যালঘু মুছলমানদের সংকটৰ সময কখনো কথা একটি নাবলা তথাকথিত জাতীয় সংগঠনগুলিও ওই ঘটনার প্রতিবাদ করে নিজেকে সংখ্যালঘু মুছলমানের প্রতিও দায়ৱদ্ধ বলে জাহির করার প্রয়াস করল। জাতীয়তাবাদী শিবিরের অন্যতম ছাত্রনেতা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য নেতৃত্বাধীন আসুয়েও ওই ঘটনার প্রতিবাদে গুয়াহাটীর রাজপথে প্রতিবাদী কাৰ্যসূচী নিয়েছিল। সে সময় কৃষক নেতা অখিল গগৈর মতো একজন সংগ্রামী জাতীয় প্রগতিশীল নেতৃত্বই মাত্র একদিনের জন্য গ্রহণ করা কার্যসূচী দুর্গত লোকদের জন্য নিশ্চয় যথেষ্ট ছিল না আর সেটাও শুধু রেচনের দাবীতে। অপরদিকে অৰ্দ্ধশতাধিক সংখ্যালঘু মুছলমান লোক নিহত হওয়াৰ পরও বিশেষ ভূমিকা না নেওয়া অখিল গগৈ কিন্তু উরিয়ামঘাটে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভূমিকা নিয়ে অসমবাসীর মন জয় করতে সক্ষম হন। আমি বলতে চায়নি যে- উৰিয়ামঘাটে কম মানুস মরেছে, তাই আন্দোলন দুর্বল করে করতে হবে। আমার মতে নিরীহ সাধারণ জনতার ওপর অত্যাচার চললেই তার প্রতিবাদ বলিষ্ঠতারেই নিতে হয়। বৈষম্য আমাদের কাম্য নয়। কিন্তু আমার প্রশ্নটা হল-বিটিএডির দুর্গত লোকদের অধিকার রক্ষার জন্য উরিয়ামঘাটের মতো অখিল গগৈ কেন বলিষ্ঠ আন্দোলন গঢ়ে তুলতে পারলনা?
ঘ) ‘ডি’ ভোটার ঃ সংখ্যালঘু রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ ইছু ডি ভোটার। ডি ভোটারের নামে অসমে কয়েকলক্ষ প্রকৃত অসমীয়া ভাৰতীয় সংখ্যালঘু লোকের সংবিধান প্রদত্ত নাগরিক অধিকার খর্ব করে বসরের পর বসর হাৰাশাস্তি কৰে থাকা হয়েছে। কৃষক এবং নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য লড়াই করা অখিল গগৈ সম্পূর্ণ এক্ষেত্রে নীরব কেন? ডি’ ভোটাৰ সমস্যা সম্পর্কে স্পষ্ট স্থিতি ও নীতি কি? তা জনগণকে জানাবনে কি?
ঙ) আমি জানি অসমের গুৰুত্বপূর্ণইছু হচ্ছে বিদেসী সমস্যা ও এর সঙ্গে জড়িত থলুওয়া লোকের অধিকার রক্ষার প্রশ্ন। অসমে থলুওয়া কারা? এটা একটি বহু বিতর্কিত বিষয়। আজ বিতর্কে নাগিয়ে আমি সৰাসৰি জানতে চাইব অখিল গগৈর মতে অসমের থলুওয়া লোক কারা? বিদেসী সমস্যার স্থায়ী সমাধানের সঙ্গে থলুওয়া লোকের অধিকার রক্ষার প্রশ্নটা জড়িত করে অখিল গগৈ কি চিন্তা করেছে, সেই কথাই আসলে দেখা যায-অখিল গগৈর গ্রন্থ বিদেশী সমস্যা আৰু জাতীয় আন্দোলনৰ পথ কিতাপটির বিদেশী অনুপ্রৱেশ সমস্যাৰ সমাধান শীর্ষক পঞ্চদশ অধ্যয়নের (২১০ পৃষ্ঠা) উল্লেখ করছেন যে- “১৯৫১-৭১ সনের মধ্যের মানুষগুলোর বংগমূলীয়া স্বদেসী বলে চিহ্নিত মানুষগুলোকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করার প্রশ্নই উঠতে পারেনা। তাদের সব অধিকার আন যিকোনো থলুওয়াৰ সমানই হতে হবে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে ওপরের কথাগুলো মেনে নিয়ে অথাৎ স্বদেসী-বিদেসী চিহ্নিত (লগে লগে বিতাড়িত) হওয়ার পর থলুওয়া মানুষের প্রতি দুটি অধিকার সুরক্ষিত করতে হবে। এই সম্পর্কে আমাৰ অসম’ নামের পত্রিকার ১৬ অক্টোবর ২০১২ সনে প্রশান্ত ৰাজগুৰুয়ে দেওয়া পরামর্শ দুটি সময়োপযোগী। তাই আমরা ভাবি ঃ ১। ১৯৭১ সন কিম্বা তার পর বিধান সভা নির্বাসনের ভোটার তালিকা ভিত্তি করে (বা অন্য কোনও তারিখ নিদ্ধারন করে) ৫০ শতাংশর চেয়ে কম ধর্মীয় সংখ্যালঘু ভোটার থাকা সমষ্টিগুলোতে থলুওয়ার জন্য সংরক্ষন স্থানীয় নিকায়গুলোতে একই ব্যৱস্থা প্রযোজ্য হরে। ২। সেই ভিত্তিবসরের ভিত্তিতে কিম্বা এনআরসি প্রস্তুতকরণের দিন থেকে বসবাস করা প্রব্রজিত লোকদের পঞ্চায়ত এলেকা কিম্বা নগর এলেকা বাদ দিয়ে নতুন জাইগায় জমি ক্রয়/দখলের সুবিধা কৰ্ত্তনের ব্যৱস্থা পঞ্চম ও ষষ্ঠ অনুসূচির আধারে এবং অন্যান্য পাহারীয়া জাতির রাজ্যে থাকা সুবিধার মতো সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত কৰা।” ওপরের পৰামর্শ দুটি বিশ্লেষণ করলে অখিল গগৈ ভয়ঙ্কর স্ব-বিরোধী অৱস্থান গ্রহণ করা দেখা যায়। যে সময় ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুছলমানকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করার প্রশ্নই উঠতে পারেনা বলে বলা হয়েছে সে সময় প্রকারান্তরে সাংবিধানিকভাবে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করার কু-অভিসন্ধিও রচনা করেছে। অপরদিকে তিনি সমর্থন কিম্বা চিন্তা করা এই থলুওয়ার সংজ্ঞা আমার দৃষ্টিতে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভংগীরে নিরূপন করেছে (হিন্দুরা থলুওয়া আর ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুছলমানরা থলুওয়া নয়)। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, নাগরিকের সমঅধিকার, সমবিকাশ ও সমমৰ্যদার শ্লোগান দেওয়া অখিল গগৈ কি যুক্তির ওপর ভিত্তি করে প্রশান্ত ৰাজগুৰুয়ে দেওয়া অগণতান্ত্রিক ও চরম সাম্প্রদায়িক পরামর্শ দুটি সময়োপযোগী বলে সমর্থন ও গ্রহণ করেছেন? এই সম্পর্কে অখিল গগৈকে স্থিতি স্পষ্ট করার জন্য আহবান জানালাম। আমি আগেই বলছি যে অখিল গগৈ নেতৃত্বাধীন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি জাতি-ধর্ম-বর্ণ-ভাষা নির্বিশেষে অসমে সর্বস্তরের লোককে আস্থাই নিতে যত্ন করে ধীরে ধীরে এক প্রচুর সম্ভাৱনাময় শক্তিশালী বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্ম প্রকাশ করেছে। এই বিকল্প রাজনীতি সম্প্রতি ভাঙোনমুখী বৃহত্তর অসমীয়া জাতির ফের গঠনের প্রক্রিয়ার পথ শুধু সুচল করে তোলার সম্ভাৱনা জাগিয়ে তুলেছে। আমি ভাবি এই সম্ভাৱনাময় বিকল্প ৰাজনীতি বাস্তৱায়িত হইতে হলে অখিল গগৈ ও তার সংগঠন আমি উত্থাপন করা উপৰোক্ত প্রশ্নগুলোর সমাধান গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল দৃষ্টিভংগীরে স্পষ্টভাৱে জনগণকে দিতে পারতে হবে।